মা, মাটি ও মানুষ-এই তিনের সমন্বয়ে আমাদের আবেগের রাজ্য। চিরন্তনভাবেই সর্বকালের বাঙ্গালী জাতির জন্য এই সত্য গভীরভাবে প্রথিত। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই তিনের সমন্বয়েই আমাদের জীবন আবর্তিত হয়। তাই, এর বিচ্ছেদে আমাদের নিগূড় অনুভূতিতে লাগে অনির্বচনীয় আঘাত।
এই তিনের মধ্যে ভূমির চিরন্তনতা আমাদের ক্রমপরিবর্তিত জীবনব্যবস্থায় ফেলেছে আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব। অপরদিকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ভূমি নিয়ে বাংলার মানুষের শোষণ, অবিচার, বঞ্চনা তা ইতোমধ্যে সকল কাব্য, সাহিতের গণ্ডিকে পেরিয়ে কালোত্তীর্ণ হয়ে যুগে যুগে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে মুখে মুখে রচে উঠেছে নানা গল্পকথায়। তাই আজও মানুষের কাছে একখন্ড জমি অত্যন্ত মূল্যবান, যেন যক্ষের ধন। অবমূল্যায়নের এই যুগে একমাত্র ভূমিই দেয় মূল্যবৃদ্ধি, তবু সেটিই শেষ কথা নয়। এর সাথে জড়িত যে আবেগ তা মূল্যায়নাতীত।
তবু আপন মানুষ যেমন বঞ্চনার কারণ হয় সবচেয়ে বেশি, জমি-জমা নিয়েও মানুষের ভোগান্তি অশেষ। কারণ ক্রমবর্ধমান জনবিষ্ফোরণের এই দেশে সীমিত সম্পদ, সম্পদের অস্বাভাবিক বৈষম্যে ধনীশ্রেণীর আধিপত্য, সামাজিক দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি নানাবিধ কারণে ভূমি’র প্রতি একদিকে মানুষের সীমাহীন আগ্রহ জন্মেছে, তেমনি ভূমি আইনের ব্যাপকতা, বাস্তবায়নের বাস্তবিক জটিলতা এবং অনেক ক্ষেত্রে আমাদের উদাসীনতা ভূমি ব্যবস্থাপনাকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় আধুনিকতায় রূপ দিতে পারেনি।
তবে আশার কথা হল, বর্তমান সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনার আধুনিকতার উন্নয়ন সাধনে বিশেষ মনোযোগী হয়েছেন। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমি সেক্টরটিকে আধুনিকায়নের বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এটুআই ও গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিট এ বিষয়ে বেশ কিছু কাজ সম্পন্ন করেছে। এছাড়া, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রণোদনায় মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সহকারী কমিশনার (ভূমি)গণের অনেকেই নিজ নিজ এলাকার প্রেক্ষাপটে উদ্ভাবনী উদ্যোগকে কাজে লাগিয়ে টেকসই পরিবর্তন প্রণয়নে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন।
এরই একটি অংশ হিসেবে উপজেলা ভূমি অফিস, রাউজান, চট্টগ্রাম তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নামজারির সমগ্র প্রক্রিয়াটি অনলাইন ও এসএমএস ভিত্তিক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং বর্তমানে এটি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এছাড়া গণশুনানী দিবস, সেবাকেন্দ্র স্থাপন, অনলাইনে অভিযোগ দায়ের, ফ্রি-ওয়াইফাই জোনসহ নানামুখী জনসেবামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হল, যুগ যুগ ধরে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত থেকে ভূমি মালিকদেরকে বের করে এনে সরাসরি ভূমি অফিসের সাথে সংযোগ স্থাপন করা এবং সর্বনিম্ন মূল্যে, ভোগান্তি ছাড়াই তাঁদের কাঙ্ক্ষিত সেবাকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেয়া।
আমাদের এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে আপনার মূল্যবান মতামত প্রদান করার জন্য আপনাদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ রইল। আসুন আমরা সকলে মিলে দেশকে আরো সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে নিজেদের সর্বোচ্চ ত্যাগ, শ্রম ও নিষ্ঠা প্রদর্শন করি। সকলকে জানাই অশেষ ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS